খালেদার জামিন শুনানি

এটর্ণী জেনারেলের সঙ্গে বিতন্ডা, হট্টগোল, এজলাস ছাড়লেন বিচারকরা

আদালত প্রতিবেদক |

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে মেডিকেল বোর্ডের তার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষ দাখিল না করা নিয়ে এটর্নি জেনারেলের সঙ্গে বিতন্ডা হয়েছে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের। এ সময় হট্টগোল ও হৈচৈ ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতিসহ ৬ জন বিচারক তাদের আসন থেকে উঠে যান।

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে সময় চান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের কাছে প্রতিবেদন আছে। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কীসের প্রতিবেদন, ওটা ড্যাবের প্রতিবেদন। জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘বিএসএমএমইউর। গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়া রাজার হালে আছেন।

এ পর্যায়ে বিএনপির আইনজীবীরা আদালতে হৈচৈ শুরু করেন। তবে মওদুদ আহমদসহ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বিচারকরা তাদের আসন থেকে উঠে যান।

এর আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। খালেদার আইনজীবীরা অবশ্য চাচ্ছিলেন ৭ ডিসেম্বর যেন এ দিন ধার্য করা হয়।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এজে মোহাম্মদ আলী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ প্রমুখ। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এদিকে, খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল রিপোর্ট এখনও হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘কিছু ইনভেস্টিগেশন বাকি আছে, সেগুলো পেতে দেরি হবে।’ 

এর আগে চ্যারিটেবল মামলায় গত ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করেছিলেন।

এরপর গত ১৪ নভেম্বর হাইকোর্টের খারিজাদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১৪০১ পৃষ্ঠার ওই আপিল আবেদন দাখিল করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন আদালত।

এরপর ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করেন। এ মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email