পরিস্থিতির জন্য মিডিয়াকে দুষছেন সাহেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক।

মিডিয়া কিছু ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্যই পরিস্থিতির শিকার হয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে বলে আদালতে দাবি করেছেন রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদ ওরফে মো. সাহেদ করিম।

এদিন আদালত করোনাভাইরাসের টেস্ট না করে ভুয়া রিপোর্ট ও ভুয়া নেগেটিভ ও পজিটিভ সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার মো. সাহেদ ওরফে মো. সাহেদ করিম ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রথমে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু, ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি কে এম সাজ্জাদুল হক শিহাব, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ বলেন, ‘আসামিরা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা, বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন, জাল জালিয়াতি করেছেন। করোনা পরীক্ষা না করেই মানুষকে নেগেটিভ-পজিটিভ সার্টিফিকেট দিয়েছেন। তাদের ওই জাল-জালিয়াতির রিপোর্টের কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তারা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন। তাই ন্যায় বিচারের স্বার্থে রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে তদন্ত কর্মকর্তার প্রার্থীত মতে রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক।’

অন্যদিকে, আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, মনিরুজ্জামান, শাহ আলম রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন আবেদন করে শুনানিতে বলেন, ‘আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষ। তাই এই তদন্তকালীন সময়ের মধ্যে তারা সবই বের করে ফেলবেন। এই কারণে রিমান্ডের কোনো প্রয়োজন নেই। তাছাড়া আসামিরা অসুস্থ। সাহেদের বাবা কিছুদিন আগে মারা গেছেন। সেই শোক তিনি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। নিজেও করোনা অক্রান্ত হয়েছেন। মামলার তদন্তে তারা বাধাগ্রস্ত করবেন না। মানবিক বিবেচনায় আসামিদের রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিন দিন।’

এদিকে রিমান্ড বাতিলপূর্বক তার পক্ষের আসামির জামিন আবেদনের শুনানি করাকালে সাহেদ কাঠগড়া থেকে কিছু বলার জন্য বিচারকের কাছে অনুমতি চান। বিচারক অনুমতি দিলে সাহেদ চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, ‘করোনা রোগীদের পরীক্ষা যখন বাংলাদেশে শুরু হয়, তখন আমার হাসপাতালই ঝুঁকি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা ও চুক্তি করে করোনার চিকিৎসা শুরু করে। শতশত করোনা রোগীর চিকিৎসা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘বলা হচ্ছে, আমার হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০১৪ সালে। কিন্তু তা সত্য নয়, ২০১৭ সাল পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন আছে। এরপর তা রিনিউ করতে দেওয়া হয়েছে, যা প্রক্রিয়াধীন। এখানে আমার কোনো অবহেলা নেই। তাই লাইসেন্স নাই বলা যাবে না।’

সাহেদ বলেন, ‘করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে এসেই তিনি নিজে যেমন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তার বাবাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া তার এমডিসহ অনেক অফিসারই আক্রান্ত হয়েছেন। মিডিয়া কিছু ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য আজ পরিস্থিতির শিকার হয়ে এখানে এসেছি।’

সাহেদের বক্তব্য শেষ হওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তার (সাহেদ) বক্তব্য মিথ্যা বলে আদালতের কাছে দাবি করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে সাহেদ ও মাসুদ পারভেজের ১০ দিনে ১০ দিন এবং তারেক শিবলীর পুনরায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ডিএন/সিএন/জেএএ/৭:২৫পিএম/১৬৭২০২০২০

Print Friendly, PDF & Email