বাজেটে সংবাদপত্র শিল্পের দাবি উপেক্ষিত, সাংবাদিকদের জন্যও সুখবর নেই

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক |

এবারও বাজেটে সংবাদপত্র শিল্পের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবি-দাওয়া উপেক্ষিত হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে কিছুই পেল না সংবাদপত্র শিল্প। সাংবাদিকদের জন্যও কোন সুখবর নেই।

২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সংবাদপত্র শিল্পের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা নেই। করপোরেট কর কমানো, নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে শুল্ক্ক কমানো, অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারসহ নানা দাবি থাকলেও অর্থমন্ত্রীর ঘোষণায় কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) গত কয়েক বছর ধরে করপোরেট ট্যাক্স ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ এবং সংবাদপত্র শিল্পের প্রধান কাঁচামাল নিউজপ্রিন্ট আমদানির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফের দাবি জানিয়ে আসছে। এ ছাড়া বিজ্ঞাপন আয়ের ওপর উৎসে কর ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা এবং উৎসস্থলে কাঁচামালের ওপর ৫ শতাংশের বদলে অগ্রিম কর (এআইটি) শূন্য শতাংশ করা, কর্মীর বাড়ি ভাড়ার পুরোটাই করমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে নোয়াব। কিন্তু এবারের বাজেটে কোনো দাবিই রাখা হয়নি।

বিশ্বায়ন ও ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে ছাপা সংবাদপত্র এমনিতেই সমস্যায় রয়েছে। করোনাভাইরাসের মহামারি সেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। এ অবস্থায় টিকে থাকার জন্য সংবাদপত্রের এসব সুবিধা অনিবার্য হয়ে পড়েছে বলে মনে করে নোয়াব। করোনা পরিস্থিতিতে পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপন শূন্যের কোঠায় নেমেছে, পত্রিকার গ্রাহকও ব্যাপকভাবে কমেছে। ফলে প্রচুর আর্থিক লোকসান গুনতে হচ্ছে। পত্রিকাগুলোর মাসিক বেতন ব্যয়, অফিস ভাড়া, ব্যবস্থাপনা ব্যয়, পত্রিকা পরিবহন ব্যয়সহ অন্য সব ব্যয় অপরিবর্তিত রয়েছে। কয়েকটি পত্রিকা প্রিন্ট সংস্করণ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে নোয়াব বলেছে, সংবাদপত্র সেবা শিল্প হওয়া সত্ত্বেও বিশেষ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। করোনা সংকটে সব খাতই প্রণোদনা, সহায়তা বা ছাড় পেয়েছে। সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যম এসবের বাইরে আছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এ শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।

এছাড়া করোনাকালে সাংবাদিকতা পেশা অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সংবাদকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে কিংবা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। কয়েকশ সাংবাদিক আক্রান্ত হয়ে সপরিবারে কষ্টের জীবনযাপন করছেন। সাংবাদিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিক পরিবারকে অনুদান দেয়াসহ দুর্দশাগ্রস্তদের সহায়তার দাবি করা হয়েছে। রুগ্ন হয়ে পড়া সংবাদমাধ্যম টিকিয়ে রাখতে নীতিসহায়তার দাবিও উচ্চারিত হয়। কিন্তু বাজেটে তার কোন প্রতিফলন নেই।

Print Friendly, PDF & Email