দখল-জালিয়াতির নজিরবিহীন নির্বাচনে ২১০টির মধ্যে আ’লীগই ১৭৬, বিএনপি ২১

0-1নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভোটকেন্দ্র দখল, অবৈধভাবে ব্যালট পেপারে সিল মারা, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, হামলা, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সারা দেশে শেষ হয়েছে দলীয় প্রতীকে পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এখন চলছে ভোট গণনার কাজ।  ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে এরই মধ্যে ১৯ জেলায় ৩৩ জন মেয়র পদপ্রার্থী  নির্বাচন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন।
দেশের ৩২৩টি পৌরসভার মধ্যে ভোট হয়েছে ২৩৪টি পৌরসভায়। ২৩৪টি মেয়র পদ ছাড়াও দুই হাজার ১৯৩টি সাধারণ কাউন্সিলর ও ৭৩১টি সংরক্ষিত পদে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে সংঘর্ষ, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, কেন্দ্র দখলসহ বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার কারণে ১২টি জেলার ৩১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
দলীয় প্রতীকে প্রথম পৌরসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভূমিধস বিজয় অর্জন করেছে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মোট ২৩৪টির মধ্যে ২০৯ পৌরসভার ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৭৬ পৌরসভায় মেয়দ পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। বিএনপি ২১, জামায়াতে ইসলামী (স্বতন্ত্র) ২, জাতীয় পার্টি ১ ও স্বতন্ত্র পদে ৯ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া বিনা ভোটে আগেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাতজন মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
অনিয়ম আর সহিংসতার মধ্যে দেশে প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীকে পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর ফলাফল আসতে শুরু করেছে।

এর আগে বুধবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট হয়। অনিয়ম আর সহিংসতার মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সংঘর্ষে গুলিতে যুবদল নেতা নুরুল আমিন (৪০) নিহত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের বিজয়ীরাঃ
আশরাফুল ইসলাম (বিদ্রোহী, মেহেরপুর, গাংনী), এজিএম বাদশা (বিদ্রোহী, ধুনট, বগুড়া), মোজাফফর হোসেন বাবলু মিয়া (বিদ্রোহী, বোয়ালমারী, ফরিদপুর), উবায়দুর রহমান চৌধুরী জিকু (বিদ্রোহী, সদর, চুয়াডাঙ্গা), জাহাঙ্গীর আলম (বিদ্রোহী, জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা), হাসিনা গাজী (তারাব, নরসিংদী), সুভাস চন্দ্র (বানারীপাড়া, বরিশাল), আলমগীর হোসেন (রানীশৈংকল, ঠাকুরগাঁও), সনাৎ কুমার বিশ্বাস (চালনা, খুলনা), রায়হান উদ্দিন মিয়া (নগরকান্দার, ফরিদপুর), জাফরউল্লাহ টিটু (সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম), এনামুল হক (মিরপুর, কুষ্টিয়া), শামসুজ্জামান (কুমারখালী, কুষ্টিয়া), বিপুল হাওলাদার (কলাপাড়া, পটুয়াখালী), আব্দুল বারেক (কুয়াকাটা, বরগুনা), আব্দুল কাদের মির্জা (বশুরহাট, নোয়াখালী), আব্দুল্লাহ আল মামুন (সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা), বদিউল আলম (সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম), আব্দুল কায়ের (রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর), ধীরেন্দ্র লাল সাহা (মাধরপুর, হবিগঞ্জ), আবু হানিফ (শফিপুর, টাঙ্গাইল), শাহাদাত হোসেন (মির্জাপুর, টাঙ্গাইল), দেওয়ান সেকার (সদর, নওগাঁ), গোলাম মাহফুজ (আক্কেলপুর, জয়পুরহাট), কামরুজ্জামান (বাঘারপাড়া, যশোর), গিয়াস উদ্দিন (মিরসরাই, চট্টগ্রাম), আওলাদ খান (শিবচর, মাদারীপুর), হায়দার আলী (নাড়িয়া, শরীয়তপুর), মতিয়ার রহমান (দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা), রেজাউল কবির (নজিরপুর, নওগাঁ), হালিমুল আলম (কালাই, জয়পুরহাট), সেলিম জাহাঙ্গীর (পাইকগাছা, খুলনা), ওমর ফারুক (দাগনভূঞা, ফেনী), শামসুল হক (মাটিরাঙা, খাগড়াছড়ি), জান্নাতুল ফেরদৌস (সিংগাইর, নাটোর), আলী আকবর (কালিহাতী, টাঙ্গাইল), দেবাশীষ পাতিল (রাউজান, চট্টগ্রাম), মিজানুর রহমান মিজান (চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা), আনিসুর রহমান, (শিবপুর, গাজীপুর), সুরুজ ব্যাপারী (জাজিরা, শরীয়তপুর), সুভাষ চন্দ্র শীল (কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ), উত্তম কুমার সাহা (বদরগঞ্জ, রংপুর), মো. নিজাম উদ্দিন ওলিউল্লাহ (কানাইঘাট, সিলেট), ফজলুর রহমান (সদর, মৌলভীবাজার), অ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান রতন (মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা), মওলানা মোহাম্মদ আব্দুস সালাম (দুর্গাপুর, নেত্রকোনা), জাকির হোসেন তালুকদার, (দৌলতখান, ভোলা), শফিক জাহেদী রবিন (মেলান্দহ, জামালপুর), তসলিম উদ্দিন চৌধুরী (নলছিটি, ঝালকাঠি), আবুল কালাম আজাদ (ঈশ্বরদী, পাবনা), আব্দুর রব (সদর, সিরাজগঞ্জ), হাজি নিজামউদ্দীন (কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ), খুরশিদ হায়দার টুটুল (সদর, মাগুরা), মোস্তফা সালাহউদ্দিন (পাটগ্রাম, লালমনিরহাট), রিয়াজুল ইসলাম (সদর, লালমনিরহাট), আনোয়ার হোসেন আকন্দ (পাথরঘাটা, বরগুনা), শাহাদাত হোসেন (সদর, বরগুনা), মো. মনিরুজ্জামান (সদর, ভোলা), শফিক-উজ্জামান (মুলাদি, বরিশাল), শাজাহান শিকদার (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম), তাকজিল খলিফা (আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া), জামিল হোসেন চলন্ত (হাকিমপুর, দিনাজপুর), মঞ্জুরুল ইসলাম (ধনবাড়ি, টাঙ্গাইল), কাজী আশরাফুল (শৈলকুপা, ঝিনাইদহ), শাহনেওয়াজ আলী (গুরুদাসপুর, নাটোর), হাসান কাদির গনু (আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা), নূর উদ্দিন (চৌগাছা, যশোর), আবু বকর সিদ্দিক (নালিতাবাড়ী, শেরপুর), খলিল হোসেন (সদর, মাদারীপুর), কাজী মাহমুদুল (মনিরামপুর, যশোর), খলিল উদ্দিন (জকিগঞ্জ, সিলেট), সেলিমুল হক (বাঁশখালী, চট্টগ্রাম), আব্দুল মজিদ (কাকনহাট, রাজশাহী), মুক্তার আলী (আড়ানী, রাজশাহী), আব্দুল কাইয়ুম (হোসেপুর, কিশোরগঞ্জ), গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া (সদর, শেরপুর), আব্দুল ওয়াহাব (সুজানগর, পাবনা), গোলাম কবির (স্বরূপকাঠী, পিরোজপুর), আব্দুল মালেক (ভবানীগঞ্জ, রাজশাহী), শামীমুল ইসলাম (ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া), রফিকুল ইসলাম (কেশবপুর, যশোর), আবুল কালাম আজাদ (তাহেরপুর, রাজশাহী), তোফাজ্জল হোসেন (দুর্গাপুর, রাজশাহী), কাজী লিয়াকত (সদর, গোপালগঞ্জ), আবু সাঈদ (শ্রীবরদী, শেরপুর), তরিকুল ইসলাম (খোকসা, কুষ্টিয়া), সহিদুজ্জামান (কেশরহাট, রাজশাহী), মোহাম্মদ আলী (সদর, রাজবাড়ী), মাসুদ বিশ্বাস (পাংশা, রাজবাড়ী), ফখরুল আলম (ভৈরব, কিশোরগঞ্জ), উমা চৌধুরী (সদর, নাটোর), হেলাল উদ্দিন (কাহালু, বগুড়া), আব্দুল জলিল (সদর, কুড়িগ্রাম), শাহিনুর রহমান (হরিণাকুণ্ডু, ঝিনাইদহ), রফিকুল ইসলাম (গৌরিপুর, ময়মনসিংহ), আব্দুল্লাহ আল পাঠান (রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ), তৌহিদুর রহমান (শিবগঞ্জ, বগুড়া), মো. কামরুজ্জামান (ফরিদপুর, পাবনা), গোলাম হাসনাইন (ভঙ্গুরা, পাবনা), একেএম ইউসুফ আলী (হাতিয়া, নোয়াখালী), ইকবাল হোসেন (গফরগাঁও, ময়মনসিংহ), মেজবা উদ্দিন (রামগতি, লক্ষ্মীপুর), আব্দুস সাত্তার (শেরপুর, বগুড়া), মাহমুদ পারভেজ (সদর, কিশোরগঞ্জ), আবুল হাসান (কুলিয়ারচর, কিশোরগঞ্জ), আনোয়ার হোসেন (বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ), শওকত ওসমান (কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ), মাহমুজুল হক (ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর), হারিছুর রহমান (গৌরনদী, বরিশাল), আব্দুর রশিদ (মহেশপুর, ঝিনাইদহ), আউয়ুব বখত (সদর, সুনামগঞ্জ), হারুন-অর রশিদ (পটিয়া, চট্টগ্রাম), মো. জাহাঙ্গীর বিশ্বাস (সদর, নড়াইল), আসাদুল হক ভূঁইয়া (কেন্দুয়া, নেত্রকোনা), ছালেক মিয়া (শায়েস্তাগঞ্জ, নবীগঞ্জ), হিরেন্দ্র লাল সাহা (মাধবপুর, হবিগঞ্জ),  নাজমুল আলম (কচুয়া, চাঁদপুর), মাহবুবুল আলম (হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর), আকবর হোসেন (সদর, রাঙামাটি),

বিএনপির বিজয়ীরাঃ
গাজী আখতারুল ইসলাম (কলারোয়া, সাতক্ষীরা), তাসকিন আহমেদ চিশতি (সাতক্ষীরা সদর), নজরুল ইসলাম (গোপালপুর, নাটোর), নাজিম উদ্দিন (চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ), ছাবির আহমেদ চৌধুরী (নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ), মির্জা ফয়সাল আমীন (সদর, ঠাকুরগাঁও), সাইফুল ইসলাম (গাবতলী, বগুড়া), জাহিদুল ইসলাম (কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ), ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী (জলঢাকা, নীলফামারী), তৌহিদুল ইসলাম (সদর, পঞ্চগড়), তোফাজ্জল হোসেন (শান্তাহার, বগুড়া),

জামায়াতে ইসলামী (স্বতন্ত্র)ঃ
মাওলানা মুহাম্মদ হানিফ (বীরগঞ্জ, দিনাজপুর), নজরুল ইসলাম (সদর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ),

জাতীয় পার্টির বিজয়ীরাঃ

বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরাঃ
রফিকুল আলম (সদর, খাগড়াছড়ি), গাজী কামরুল হুদা সেলিম (সদর, মানিকগঞ্জ), আব্দুল হান্নান তালুকদার (মদন, নেত্রকোনা), আব্দুল কাইয়ুম (করিমগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ), মর্তুজা সরকার (ফুলবাড়িয়া, দিনাজুপর), আব্দুস সাত্তার (ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ), শেখ নিজাম (গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী), ফকির মুশফিকুর (কালিয়া, নড়াইল), রেজাউল করিম (চাটমোহর, পাবনা), কারিবুল হক (শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ)

এর আগে বুধবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট হয়। ভোটে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিতে যুবদল নেতা নুরুল আমিন (৪০) নিহত হয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email