মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের বিকৃত ব্যাখ্যা করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

fakhrul-2নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে করা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে বিকৃত ব্যাখ্যা করে ক্ষমতাসীন মহল অপরাজনীতিতে মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, গত ২১শে ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত আলোচনা সভায়  বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্যের একটি অংশের বিকৃত ব্যাখ্যা করে ক্ষমতাসীন মহল যে অপপ্রচার ও বিভিন্ন মতলবী কার্যক্রম শুরু করেছে আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। ওই ভাষণে খালেদা জিয়া স্বাধীনতাযুদ্ধে মহান শহীদদের সংখ্যা নিয়ে যে বিভ্রান্তি ও বিতর্ক রয়েছে রেফারেন্স হিসাবে সে কথার উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম প্রতিষ্ঠিত বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধে বিশ্বাসী এদেশের সর্ববৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল। রণাঙ্গনের অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এই দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম খালেদা জিয়া নিজেও তার শিশু সন্তানদের নিয়ে দুঃসহ বন্দি জীবন কাটিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান দেয়ার ব্যাপারটি তাই এই দলের কারও কাছ থেকে শিখতে হবে না। জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করার উদ্দেশে প্রথম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার উদ্দেশে তিনিই মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়াই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহের সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করেন। তার নির্দেশে তৎকালীন ঢাকা সিটি মেয়র বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা ঢাকা মহানগরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোর নামকরণ করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নামে। মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের তালিকা ও পরিচিতি আজ পর্যন্ত সংরক্ষিত না থাকায় স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বিভিন্ন শক্তি ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে নানা ধরনের তথ্য ও বিতর্ক উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন গ্রন্থে শহীদদের বিভিন্ন রকম সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। দেশনেত্রী সে কথাই তুলে ধরেছেন তার বক্তব্যে। এর মাধ্যমে তিনি মহান শহীদদের পরিচিতি ও প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণের প্রয়োজনীয়তার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন, যাতে তাদেরকে উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করা যায়। এই কথা বলার মাধ্যমে শহীদদের প্রতি কোন ধরনের অসম্মান প্রদর্শনের প্রশ্নই আসে না। মির্জা আলমগীর বলেন, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করেনি বরং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সাজিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করেছে এবং যারা প্রকৃত শহীদদের তালিকা ও পরিচিতি সংরক্ষণের মাধ্যমে তাদের সম্মানিত করতে চায় না, তারাই বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে বিকৃত ব্যাখ্যা করে অপরাজনীতিতে মেতে উঠেছে। আমরা তাদের এই হীন অপপ্রচার ও তৎপরতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্বাস করি এই ধরনের হীন অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।

Print Friendly, PDF & Email