আল্লামা আহমদ শফির উত্তরসূরি শেখ আহমদ, বাবুনগরী বাদ

দেশনিউজ ডেস্ক |

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী আমৃত্যু হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাদ্রাসার শুরা কমিটি। একই সঙ্গে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে আল্লামা শেখ আহমদকে মনোনীত করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত চলা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে –

(১) শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি মোহতামিম পদে বহাল থাকবেন। (২) শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীকে অসুস্থতার কারণে এবং আল্লামা শফির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহযোগী পরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তবে মজলিশে ইলমীসহ বাকী সব পদে বহাল থাকবেন। (৩) আল্লামা শেখ আহমদ সহযোগী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। (৪) অন্য পদে সকলে বহাল থাকবেন। (৫) মুফতি আজম আব্দুস সালাম সাহেব স্বপদে বহাল থাকবেন। (৬) হাটহাজারীর কাশেম সাওদাগর থেকে মাদ্রাসার পাওনা টাকা আদায়ের জন্য মাওলানা ইয়াহিয়া এবং কেরানি রফিক দায়িত্ব পালন করবেন।

আল্লামা শেখ আহমদ

হাটহাজারী ওলামা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হেফাজতে ইসলামের হাটহাজারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া নোমান এসব সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন। তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে আজকের শুরা বৈঠকে উল্লেখিত ৬টি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান। একই সঙ্গে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী পদত্যাগ করেছেন বলে যে খবর ছড়িয়েছে তা গুজব বেল উল্লেখ করেন।

হেফাজতে ইসলামের আমিরের মৃত্যুর পর শেখ আহমদই মাদ্রাসার মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে একটি সূত্র ।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল সোয়া ১০ টার দিকে হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসার মজলিসে শুরার বৈঠক শুরু হয়।  বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলা ওই বৈঠকের শুরুতে জুনায়েদ বাবুনগরীকে রাখা হয়নি।

বাবুনগরীকে না রাখার বিষয়ে  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হেফাজতে ইসলাম নেতা জানিয়েছেন, বাবুনগরী শুরা কমিটির সদস্য নন, তাই তাকে বৈঠকে রাখা হয়নি।

তবে মাদ্রাসার আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত শুরা কমিটির বৈঠকে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে শুরা সদস্য করা হয়। ওই সময় তাকে মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক করা হয়।

যদিও সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় মাদ্রাসার মহাপরিচালক হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি জানিয়েছেন, ‘কাউকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক বা সহকারী পরিচালক পদ দেননি।’

বৈঠকে উপস্থিত মজলিসে শুরার সদস্যদের কয়েকজন হলেন, ঢাকার জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদ্রাসা পরিচালক ও হাইয়াতুল উলয়া কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, ফরিদাবাদ মাদ্রাসা নায়েবে মুহতামিম ও বেফাক যুগ্ম-মহাসচিব  মুফতি নুরুল আমিন, ঢাকার খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদ্রাসার মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিউচ্ছুন্নাহ মেখল মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নোমান ফয়জী, ফটিকছড়ির জামিয়া উবাইদিয়া নানুপুর মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী ও হাটহাজারীর ফতেপুর মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেপুরী।

এদিকে শুরা বৈঠক তথা মাদরাসার শীর্ষ পদে শাহ আহমদ শফীর উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে তৎপরতায় প্রকাশ্যে আসা দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এমন শঙ্কায় হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক ফোর্স মোতায়েন ছিল ।

Print Friendly, PDF & Email