নোয়াখালী ও পটুয়াখালী

আ.লীগের সম্মেলনে সংঘর্ষ ককটেল বিস্ফোরণ ভাঙচুর

নিউজ ডেস্ক |
নোয়াখালী ও পটুয়াখালীতে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিকেরও বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ, চেয়ার ছোড়াছুড় ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
আজ বুধবার সকালে ও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এসব সংর্ঘের ঘটনা ঘটে।
নোয়াখালী: নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের জেলা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক কর্মী সমর্থক আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে সম্মেলনের ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ৫৩ জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খাঁন সোহেলের অনুসারীরা জজকোট সড়ক থেকে মিছিল নিয়ে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের দিকে যাচ্ছিল। একই সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সদর-সুবর্ণচর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীও সম্মেলস্থলে যাচ্ছিলেন। নোয়াখালী টাউন হলের মোড়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি হলে প্রথমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও পরে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এক পর্যায়ে ককটেল বিষ্ফোরণ ও গুলির শব্দে শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এমপি একরামুল করিম চৌধুরী অভিযোগ করেন, শান্তিপূর্ণ সম্মেলনকে বানচাল করার উদ্দেশ্যে মেয়রের লোকজন শহরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খাঁন সোহেল পাল্টা অভিযোগ করেন, বিনা উস্কানিতে এমপি ও তার লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে।
পুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেন বলেন, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থায় রয়েছে।
পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন পণ্ড হয়েছে। প্রতিদ্বন্ধি দুই গ্রুপের চেয়ার ছোড়াছুড়ি, ভাংচুরের কারণে প্রথম অধিবেশন শেষে এ সম্মেলন প্রক্রিয়া পণ্ড হয়ে যায়। এসময় হাতাহাতি ও মারধরে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। একপর্যায়ে স্থানীয় এমপি অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমানসহ উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দ্রুত সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল গাজী ও আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন বাচ্চু মোল্লার অবস্থা গুরুতর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেল তিনটার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা বদিউর রহমান বন্টিনের সভাপতিত্বে এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সম্মেলন শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্বে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণের ক্ষেত্রে একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোটের ঘোষণা দেয়া হয়। এরপরই চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। ইউপি চেয়ারম্যান ও সভাপতি প্রার্থী রিন্টু তালুকদার এ ঘটনার জন্য অপর সভাপতি প্রার্থী ও জেলা পরিষদ সদস্য এসএম মোশাররফ হোসেনকে দায়ি করেন। তবে মোশাররফ হোসেনও পাল্টা অভিযোগ করে ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়ি করেন এ ঘটনার জন্য। পরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যানের গ্রুপ এ অবস্থা করেছে অভিযোগ মোশাররফের। বর্তমানে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত রয়েছে। তবে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম রাকিবুল আহসান বলেন, দ্রুত উপজেলা আওয়ামী লীগ জরুরি সভা ডেকে সকলের মতামতের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।

Print Friendly, PDF & Email