শুধু প্রতারণা নয়, পাওনা টাকা চাইতে গেলেও পেটাত শাহেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক।

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ মানুষের সঙ্গে শুধু প্রতারণাই করেননি, মানুষকে নির্যাতনও করতেন। বিশেষ করে কোনো পাওনাদার টাকা চাইলে তাকে সাহেদ তার টর্চার সেলে নিয়ে টর্চার করতেন।সেই টর্চারের একটি ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে ঢোকার প্রবেশ মুখেই বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এখান থেকেই সমস্ত অপকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতো রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদ।

বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় এই ভবনটিতেই কি কি আছে। ভবনটিতে ছিল শাহেদের নিজস্ব টর্চার সেলও। টাকা চাইতে আসলেই করা হতো নির্যাতন।

এক ভুক্তভোগী গণমাধ্যমকে বলেন, এখানে তার কাছে টাকার জন্য গিয়ে ছিলাম। টাকা চাওয়া মাত্রই তার লোকজন আমার দুই হাত ধরে ওই রুমটি দরজা বন্ধ করে দিল। এরপরই তিনি আমাকে মারধর করতে থাকেন। 

এমনকি পাওনাদারকে নারী দিয়ে হেনস্তা করাও ছিলো শাহেদের অন্যতম কাজ। ভুক্তভোগীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গিয়ে অভিযোগ করতে পারতো না শাহেদের বিরুদ্ধে।

এছাড়া, অপকর্ম ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে এক সময়ের ব্যক্তিগত কর্মচারী আরিফুর রহমান সোহাগকে ফোনে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পরিচয় দিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন অভিযুক্ত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদ করিম।

ওই কর্মচারীকে সাহেব বলেন,  ‘আমি এখন প্রধানমন্ত্রীর এপিএসের দায়িত্বে। আমার সাথে এগুলো করে কুলাইতে পারবা ভাইয়া বলোতো। যেহেতু আমি এখন একটা পজিশন হোল্ড করি, যদি চারটা থানায় তোমার নামে কইসা মামলা দেই ঠিক হবে জিনিসটা।’

ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘এখন আপনি যদি মামলা দিতে চান দেন আপত্তি নেই।’ 

শুধু’ই যে হুমকি দিয়েছেন তা কিন্তু নয়। ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানায় ২০১৭ সালে দায়েরকৃত এক মামলায় আসামি করা হয়েছিল সোহাগ ছাড়াও তার বৃদ্ধ বাবা-মা এবং তিন বোনকেও। কিন্তু শাহেদ করিম রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকার অজুহাতে আদালতে সাক্ষ্য দিতে না যাওয়ায় বছরের পর বছর মামলার ঘানি টানছে এই পরিবার।

ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘সাড়ে তিন বছর ধরে এই মামলায় আমি ঝুলছি।’

ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান সোহাগের মা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘‘আমাদের নামে মামলা দিছে আমরা নাকি টাকা বইয়ে আনতে যাবার লাগছি।’

ডিএন/সিএন/জেএএ/৫:২০পিএম/০৯০৭২০২০২৫

Print Friendly, PDF & Email