রাবি শিক্ষকের ছাত্রীকে বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ; ছাত্রলীগের মানববন্ধন

RU Main Gaitরাবি প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাবি শাখা ছাত্রলীগ। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তারা এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। তবে এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানান প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। অভিযুক্ত এটিএম রফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বেগম রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষক। ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিভাগের (উর্দু) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রগতিশীলতার মুখোশধারী এসব শিক্ষক যেসব অবমাননাকর আচরণ করছে তা প্রগতিশীলতার ক্ষেত্রে বাধা। মানববন্ধন থেকে ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করে শাস্তির দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা, সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাইদুল ইসলাম রুবেল, রাবি শাখা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান মর্তুজা, রাবি শাখা বঙ্গবন্ধু প্রজম্মলীগের সভাপতি সবুজ সারোয়ার প্রমূখ। মানববন্ধনটি সঞ্চালনা করেন কাউছার আহমেদ কৌশিক। মানববন্ধন শেষে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে শাস্তির দাবি করেন। লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী জানান, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের গণরুমে থাকতাম। গত ২৩ নভেম্বর হলের সিটের জন্য প্রাধ্যক্ষের কক্ষে যাই। এসময় হলের প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. রুবাইয়াত ইয়াসমিন এবং আবাসিক শিক্ষক এটিএম রফিকুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমি তাদের একাডেমিক পরিচয় জানালে তারা আমাকে সিট প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীর পরিচয় দিলে রফিকুল ইসলাম স্যার আমাকে এবং আমার ঐতিহ্যবাহী সংগঠন সম্পর্কে প্রাধ্যক্ষের সামনেই অনবরত কুরুচিপূর্ণ এবং আপত্তিকর অনেক মন্তব্য করেন। আমি তাদের ব্যবহারে মনক্ষুন্ন হলে প্রাধ্যক্ষ ম্যাডাম আমাকে হলের সিটের জন্য আবেদন পত্র লিখতে বলে। ওই ছাত্রী আরো জানান, ১৬ ডিসেম্বর র‌্যালি শেষ করে হলে ফিরতে দেরি হয় এবং হল গেটে রফিকুল ইসলাম স্যার আমাকে প্রাধ্যক্ষের রুমে দেখা করতে বলেন। আমি রুমে গেলে প্রথমেই তিনি আমাকে বলেন, ‘শুধু ছাত্রলীগ করলেই কি হলে সিট হবে? হলে সিটের জন্য আমাদের কাছে আসতে হবে।’ এসময় তার কথাবার্তা এবং শারীরিক প্রকাশভঙ্গি ছিল আপত্তিকর ও অশোভনীয়। প্রধ্যক্ষ পরিষদের আহব্বায়ক প্রফেসর শিউলী শামিম শান্তা জানান, ‘আমরা এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। অভিযোগ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। হলের প্রাধ্যক্ষ দেশের বাইরে আছেন তিনি আসলে বিস্তারিত জানানো হবে।’ অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ছাত্রী ছাত্রলীগকর্মী পরিচয়ে হলে সিট দাবি করে। আমরা তাৎক্ষনিক সিট না দিয়ে প্রক্রিয়া অনুযায়ী আবেদন করতে বলেছিলাম। এরপরে ওই মেয়ের সাথে আমার আর কোন কথা হয়নি। তবে কয়েকদিন আগে ওই শিক্ষার্থী জন্য আমার কাছে ফোন করে এক শয্যা বিশিষ্ট কক্ষ চেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা। কিন্তু এটি নিয়মবর্হিভূত হওয়ায় আমি অস্বীকৃতি জানাই। আমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক ও বানোয়াট।’ এ ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ওই হলের আবাসিক ছাত্রী ইসরাত জাহান নিপা বলেন, মানববন্ধন হওয়ার পর এ বিষয়টি শুনলাম। আমাদের হলে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।

Print Friendly, PDF & Email