সংবাদকর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মহেশখালীতে প্রতিবাদ সমাবেশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি |

কক্সবাজারের মহেশখালীতে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক প্রার্থীর সমর্থক কর্তৃক সাংবাদিকদের উপর হামলা, মারধর, ক্যামেরা ভাঙচুর, ক্যামেরা ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয়া ও হামলাকারীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে নির্বাচন চলাকালে সাংবাদিকরা এক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে।
প্রতিবাদ সভা থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ছিনিয়ে নেওয়া ক্যামেরা ল্যাপটপসহ মালামালগুলো উদ্ধারের দাবি জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে শাপলাপুরে আসা সাংবাদিকদের উপর বুধবার রাতে ৯ নাম্বার কেন্দ্রের পাশে ললিয়ার ছড়া নামক স্থানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট আব্দুল খালেকের সর্মথকরা হামলা চালায় বলে আহত সাংবাদিকরা অভিযোগ করেছেন।
সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টেলিভিশন, এশিয়া টেলিভিশন, চট্টগ্রামের সিপ্লাস টেলিভিশন এর ক্যামেরা পারসন সাংবাদিকসহ তিনজন আহত হয়।
সিপ্লাস এর কক্সবাজার প্রতিনিধি আহত সাংবাদিক সাইফুল আলম বাদশা বলেন, নৌকা প্রতীকের সর্মথকরা সাংবাদিক’ লেখা গাড়ি দেখেই গাড়ির উপর হুমরি খেয়ে পড়ে, এরপর শুরু হয় টানাহেঁচড়া ও মারধর। এ সময় সাংবাদিকদের ব্যবহৃত গাড়ি ও ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। সাংবাদিকদের ব্যবহৃত ল্যাপটপ ক্যামেরা সহ বেশ কিছু মালামাল হামলাকারীরা ছিনিয়ে নেয় বলে আহত সাংবাদিক বাদশা অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা শাপলাপুর বাজারে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে এক ব্যতিক্রমী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
মহেশখালীর প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক আমাদের সময় ও আজাদির প্রতিনিধি এসএম ফরিদুল আলম দেওয়ান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, চ্যানেল আই ও দৈনিক আমাদের সময়ের স্টাফ রিপোর্টার সরওয়ার আজম মানিক, কক্সবাজার ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের কক্সবাজার প্রতিনিধি তৌফিকুল ইসলাম লিপু, বাংলা টিভির প্রতিনিধি ও মহেশখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুব রোকন, মহেশখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ইত্তেফাকের মহেশখালী প্রতিনিধি আবুল বশর পারভেজ।
বক্তারা বলেছেন,২৪ ঘন্টার মধ্যে সাংবাদিকদের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সরকার যেখানে সংবাদ মাধ্যমকে স্বাধীনতা দিয়েছে, সেখানে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। তাই সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন না হয় সেজন্য অপরাধীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন অপরাধীরা কোন দলের হতে পারে না ,তাদের কোন পরিচয় নেই, তারা অপরাধী। সে সাথে ছিনিয়ে নেওয়া মালামালগুলো উদ্ধারের দাবি জানানো হয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো ইকবাল হোসেন জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনাটি তারা শুনেছেন এবং এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email