আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় আনা হচ্ছে সাংবাদিক শরিফুলকে

কুমিল্লা প্রতিনিধি।

উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হচ্ছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শরিফুল আলম চৌধুরীকে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. আবু বকর সিদ্দিক ফয়সাল।

গণমাধ্যমকে আজ সোমবার ডা. ফয়সাল নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘গতকালই শরিফুলকে সার্জারি ওয়ার্ড থেকে অর্থপেডিক ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছিল। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বিধায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।’

গত শনিবার দুপুরে মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামে সাংবাদিক শরিফুলকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাহান মিয়ার লোকজন। এ ঘটনায় শাহাজাহানকে গ্রেপ্তার করা হলেও গতকাল রোববার তিনি ভার্চ্যুয়াল আদালত থেকে জামিন পান।

এদিকে একই ঘটনায় আহত ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি সাংবাদিক শরীফের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে.এম মনজুর আলমের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন। তার দাবি, আসামি শাহজাহান মিয়াকে গ্রেপ্তারে ওসি মনজুর সহযোগিতা করেননি। চেয়ারম্যানকে তিনি কৌশলে সহযোগিতা করেছেন। শরিফুলের বক্তব্য শোনার পরও চেয়ারম্যানকে দায়সারাভাবে আদালতে চালান করেন ওসি, যার ফলে সহজেই জামিন পেয়ে যান চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে ওসি মনজুর আলম বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে। আদালতে পাঠিয়েছে। জামিন দেওয়া না দেওয়ার বিষয় আদালতের বিবেচনাধীন।’

এর আগে গত শনিবার দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে চেয়ারম্যান শাহজাহানের ক্রোধের শিকার হন সাংবাদিক শরিফুল। শনিবার তিনি বাসায় আছেন খবর পেয়ে চেয়ারম্যানের লোকজন শরীফের বাড়িতে গিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে, হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে দেয়। এ ঘটনায় আহত  হন শরীফের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন। রামদা দিয়ে তার ডান হাতে কোপ দেয়, রড দিয়ে পেটায় চেয়ারম্যানের লোকজন। এ সময় আহত হন তার স্ত্রীও।

আব্দুল মতিন তখন অভিযোগ করে বলেন, ‘শরীফকে প্রাণে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে বিভিন্ন সময় কথাবার্তা বলে শরীফ। নিজেকে অনিরাপদ ভেবে একমাস বাড়ির বাইরে ছিল সে। গত সপ্তাহে বাড়ি আসে। শরীফ বাড়িতে এসেছে জানার পর চেয়ারম্যান শাহজাহানের লোকজন বাড়িতে ঢুকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে টেনে হিঁছড়ে বাড়ির উঠানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে, হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে ফেলে। তার মাথায় দা কুপিয়ে দিয়ে মারাত্মক আহত করে।’

ডিএন/জেএন/জেএএ/০৮:৩০পিএম/০৬০৭২০২০২৬

Print Friendly, PDF & Email