বন্দীদের টুপিতে নিজেরা কোনো কিছু এঁকেছে কিনা, প্রশ্ন থাকে : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দুইদিন আগে সুপ্রিম কোর্টের সামনে পুলিশের সঙ্গে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে সুযোগ পেলেই তারা ছোবল দেবে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিক্ষোভরত জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনায় পাঁচশ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হযেছে সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, “গত পরশুদিনের ঘটনা প্রমাণ করে কয়দিন বিরতি দিলেও তাদের মূলনীতি সন্ত্রাস আশ্রয়ী রাজনীতি, ভাঙচুরের রাজনীতি, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি, পেট্রোল বোমার রাজনীতি থেকে তারা বেরিয়ে আসেনি। হাই কোর্টের সামনে তারা সেটি দেখিয়েছেন।

“এই ঘটনায় এটিই প্রমাণিত হয় সুযোগ পেলেই তারা ছোবল দেবে। বিএনপি যদি সন্ত্রাস আশ্রয়ী রাজনীতি থেকে বেরিয়ে না আসে তাহলে আজকে যেভাবে বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, তা আরও বাড়বে। তারা যে আজকে জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তারা ভবিষ্যতে জনগণের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে।”

গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় নব্য জেএমবির সাত সদস্যের ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।

এ রায় নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “অতীতে যখনই কোনো জঙ্গি গ্রেপ্তার বা এনকাউন্টারে মারা গেছে বিএনপি এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, বিএনপি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রশ্রয় দিয়েছে, সহায়তা করেছে।”

“এমনকি তাদের যে বিশদলীয় জোট, এটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কয়দলীয় জোট আছে সেটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব জানেন কিনা জানি না। সেই জোটের মধ্যেও বহু নেতা আছেন যাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে একটি তালেবানি রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করা।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সেই ঘটনাপ্রবাহের ধারাবাহিকতায় আমরা গতকাল অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, গতকাল হলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ডের ঐতিহাসিক রায় হয়েছে। এই রায় যে বাংলাদেশে জঙ্গি দমনেই সহায়ক হবে তা নয়, আমি মনে করি এই রায় বিশ্ব প্রেক্ষাপটে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রায়।”

দেশের মানুষ এই রায়কে স্বাগত জানালেও বিএনপি এই রায়কে স্বাগত জানাতে ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা অবাক বিস্ময়ে এটি লক্ষ্য করলাম। এতেই প্রমাণিত হয় তারা শুধু সন্ত্রাস আশ্রয়ী রাজনীতি করে না, তারা যে জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় সেই রাজনীতি থেকেও তারা বেরিয়ে আসেনি। এটি অত্যন্ত আশ্চর্যজনক ও দুঃখজনক।”

হলি আর্টিজান মামলার রায় ঘোষণার সময় আসামির মাথায় আইএসের টুপি ছিল, এর পেছনের কারণ জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এটি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশে আছেন, আমি তার সঙ্গেও কথা বলেছি। যেহেতু বিষয়টি তদন্তনাধীন এজন্য বিষয়টি নিয়ে আমি এর বাইরে কিছু বলতে চাই না।”

বিষয়টি অ্যালার্মিং মনে করছেন কিনা প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, “অবশ্যই নয়। কারণ আমাদের দেশে আমরা যেভাবে জঙ্গি দমন করতে পেরেছি, পৃথিবীর অনেক উন্নত রাষ্ট্র এভাবে জঙ্গি দমন করতে পারেনি। এটি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। তবে এটির সঙ্গে কী বিষয় যুক্ত সেটির তদন্ত হচ্ছে, তদন্তে যেটি বেরিয়ে আসবে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এমন টুপি পাওয়ার সুযোগ নেই, আপনারা কী মনে করছেন প্রশাসনে ঘাপটি মেরে আছে এমন কিছু- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “সেটি এখনই বলা সমীচীন হবে না। কারণ বন্দীদের টুপি দেওয়া হয়, সেই টুপিতে নিজেরা কোনো কিছু এঁকেছে কিনা, সেটিও একটি প্রশ্ন থাকে।”

Print Friendly, PDF & Email