করোনার ভুয়া পরীক্ষার খবরে ইতালিতে ‘হেনস্তার শিকার’ বাংলাদেশিরা

দেশনিউজ ডেস্ক।

বিভিনন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে দুর্নীতির খবর ফলাও প্রচার পেয়েছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এসব দেশে। বিশেষ করে ইতালিতে বিরূপ আচরণের শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। কয়েকজন প্রবাসী নিজেদের অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।

ইতালিতে বসবাসরত একজন বাংলাদেশি ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্ট এ কে জামান বলেন, ইতালির সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরাখবরে বাংলাদেশিদের দায়ী করা হচ্ছে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাস নিয়ে আসার জন্য।

‘বলা হচ্ছে, প্রবাসী বাংলাদেশি যারা ফেরত এসেছে, তারাই ইতালিতে করোনাভাইরাস নিয়ে এসেছে’ যোগ করেন তিনি।

জামান বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশিরা যখন চলাফেরা করি, বেশিরভাগ সময় দেখা যায় যে, অন্যরা আমাদের দেখে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে।’

‘এমনকি আগে যেসব বার বা রেস্তোরাঁয় আমরা যেতাম, সেখানে লোকে যেন আমাদের দেখে ইতস্তত বোধ করে’ যোগ করেন তিনি।

ইতালির ফ্রিউলি ভেনেজিয়ে জুলিয়া প্রদেশের ত্রিয়েস্ত শহরে থাকেন আইরিন পারভীন খান। তিনি জানান, ইতালিতে করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভের জন্য বাংলাদেশিদের দায়ী করা হচ্ছে।

আইরিন খান বলেন, ‘ইতালিতে যখন প্রথম করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল, তখন চীনাদের সঙ্গে যেরকম ব্যবহার করা হতো, এখন বাংলাদেশিরা সেই একই ধরনের ব্যবহারের শিকার হচ্ছে।’

তিনি জানান, তার শহরের কাছাকাছি এক শহরে ৩৬ জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে, এদের প্রায় সবাই বাংলাদেশি। এরপর এখন বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর দাবি পর্যন্ত তুলছে অনেকে।

করোনাভাইরাস নিয়ে কেলেঙ্কারির খবর ইতালির পত্রিকায় ফলাও প্রচার পাওয়ার পর বাংলাদেশিদের ওপর হামলা এবং দুর্ব্যবহারের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করেন এই প্রবাসী।

তিনি বলেন, ‘মিলানে এক বাংলাদেশি ফুল বিক্রেতাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এটা যদি কোনো ইতালিয়ানের সঙ্গে করা হতো, এতক্ষণে পুলিশ অনেক কিছুই করতো। কিন্তু এক্ষেত্রে কিছুই করা হয়নি।’

আইরিন খান বলেন, ‘আমার পরিচিত এক বাংলাদেশি নারী সুপারশপে গিয়েছিলেন কেনাকাটা করতে। সেখানে তিনি সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও তিনি দুর্ব্যবহারের শিকার হন।’

তিনি বলেন, “ইতালিয়ান সংবাদপত্রগুলোর ওয়েবসাইটে খবরের নিচে যেসব মন্তব্য থাকে, সেগুলো পড়লেই বোঝা যায়, বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-বিদ্বেষ কতটা বেড়েছে।’

ডিএন/সিএন/জেএএ/৩:৪১এএম/১৮৭২০২০১৩

Print Friendly, PDF & Email