ফেনীর সেই গুণধর এসপি প্রত্যাহার

ফেনী প্রতিনিধি : সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য ফেনীর সেই গুণধর পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রবিবার (১২ মে) বিকালে পুলিশ সদর দফতরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘রবিবার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, ফেনীর পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পায় পুলিশ সদর দফতর থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রধান ডিআইজি এস এম রুহুল আমিন গত ৩০ এপ্রিল রাতে পুলিশ সদর দফতরের সংশ্লিষ্ট শাখায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গির আলম সরকার, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইউসুফ ও এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইকবাল আহাম্মদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে অভিযুক্ত এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইউসুফকে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে এবং এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইকবাল আহাম্মদকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সংযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহত নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম শ্রেণির আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার জোরালো অভিযোগ ওঠে। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।

Print Friendly, PDF & Email