রাজাকারের তালিকা, দায়ী খালেদা জিয়াই!

মাহমুদ হাসান |♦|

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াই দায়ী এই অবস্থার জন্য। এই যে সরকার এতটা অপ্রস্তুত তার জন্যও দায়ী তিনি। রাজাকার হোক বা পাকিস্তানী দালাল হোক তালিকার পিছনেও দোষী সাব্যস্ত করা যায় কারাগারে বন্দী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ না থাকলে তালিকার প্রশ্নই উঠত না। এখন তো তালিকা প্রকাশ করে আবার স্থগিত করা হলো আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত। এসব কিছুই হতো না যদি খালেদা জিয়া এই ‘অপকর্মটি’ না করতেন। স্বরাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়ের ঠেলাঠেলিতে মানুষ তদন্ত করতে শুরু করে দিয়েছিল এই ঘটনার আসল অনুঘটক কে? শেষ পর্যন্ত সচেতন সমাজ আঙ্গুল তুলেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিকে। আর তালিকাটি চেয়ে বসল এই মন্ত্রণালয়। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াই গঠন করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। যদি মন্ত্রণালয়টি গঠন করা না হতো তাহলে হয়ত অন্য কোন মন্ত্রণালয় এ কাজটি সম্পাদন করত। তাই যত দোষ খালেদা জিয়ার! কেন তিনি এই মন্ত্রণালয় গঠন করলেন?
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়ে দিয়েছে এই তালিকা পাকিস্তানীদের তৈরি করা। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় চেয়েছে, তারা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে তালিকাটি ছিল। এখন হয়ত নাই। তালিকাটি সযত্নে সংরক্ষিত ছিল তা দেখলেই বুঝা যাচ্ছিল। দেখে মনে হয়েছে রাজাকার হিসাবে তালিকাভুক্ত অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল স্বাধীনতার পরপরই। সে মামলার নম্বর ও ধারা উল্লেখ করা আছে। বিচারের সর্বশেষ অবস্থা অথবা যাদের বিরুদ্ধে শাস্তি হয়েছিল সেটাও উল্লেখ রয়েছে। কেউ কেউ কিভাবে ক্ষমা পেয়েছেন তাও বলা আছে। এক কথায় খুব যত্ন করেই তালিকাটি করা হয়েছে তা প্রতীয়মান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীও বলেছেন, পাকিস্তান সরকারের তৈরি করা তালিকা এটি। তারা কারো নাম যোগ বা বাদ দেননি। দুইদিন পর মন্ত্রী আরো জানালেন, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে পেন ড্রাইভ পেয়েছিলেন সেখান থেকে শুধু প্রিন্ট দিয়েছেন, প্রকাশ করেছেন, কোন পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংযোজন, বিয়োজন করেননি। এদিকে সব আলোচনা সমালোচনায় পানি ঢেলে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষিত রাজাকারদের তালিকায় ভুল-ভ্রান্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কীভাবে রাজাকারদের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম চলে এলো তা রহস্যজনক। এই তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় গোলমাল করে ফেলেছে। এই তালিকাটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। এটি খুব খারাপ কাজ হয়েছে।’
তাই কেউ কেউ মনে করছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন না হলেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেত। তাদের মতে যেহেতু বেগম খালেদা জিয়ার সরকার এই মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেছে তাই খালেদা জিয়াই দায়ী!!
খালেদা জিয়া দোষী হয়েছেন। তবে ভিন্ন পথে। বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়া, এরশাদ ও খালেদা এই তালিকা নিয়ে নড়াচড়া করেছেন বলেই এই ভুল-ভ্রান্তি হয়েছে।


ফুট নোটঃ অবশ্য ভিন্ন পথে কাউকে দায়ী করে ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা বলেও মনে করছেন আম জনতা। ??? তবে সচিবালয়ের ভিতর থেকে পেন ড্রাইভ এর মাধ্যমে তালিকার পিডিএফ ফাইলটি আব্দুল গনি রোডের পরিবহন পুলে আসতে যে ৬০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে সে বিষয়ে কোন আপডেট নেই এখন পর্যন্ত।

♦ সাংবাদিক মাহমুদ হাসানের ফেসবুক স্ট্যাটাস।

Print Friendly, PDF & Email