মুক্তিযোদ্ধা, রাজাকার যখন একাকার

ডা. ওয়াজেদ এ খান |♦|


একাত্তরের রাজাকারদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ‘প্রথম পর্ব’ শিরোনামে প্রকাশিত এ তালিকায় উঠে এসেছে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের নাম। বিজয়ের উনপঞ্চাশতম দিবসের আগের দিন প্রকাশিত তালিকায় স্থান পেয়েছে অনেক সার্টিফাইড মুক্তিযোদ্ধার নাম। বাদ যায়নি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ। অভিযোগ বিহিন অনেক নিরাপরাধ মানুষের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে এই তালিকায়। এমনকি বঙ্গবন্ধুর আপন বেয়াই আব্দুল হাই সেরনিয়াবাতের নাম রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু সহ অনেককেই চিহ্নিত করা হয়েছে রাজাকার হিসেবে। অপরদিকে এ তালিকায় নাম নেই যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাদেরকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তাদের কারো। এবার বিজয় দিবসে উল্লাসের মাত্রা বাড়াতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। নজিরবিহীন বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে তালিকাটি স্থগিত করা হয়েছে চার দিনের মাথায়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ত্রুটিপূর্ণ এ তালিকার দায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপর চাপানোর চেষ্টা করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উল্টো অভিযোগের তীর ছুঁড়ে দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপর।
আমরা ৩০ লাখ শহীদের কথা বলি। অথচ স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও রাষ্ট্রীয় কোন তালিকা নেই শহীদদের। সঠিক তালিকা নেই মুক্তিযোদ্ধাদের। হিসেব নেই রাজাকার, আল বদর, আল শামসদের। সরকার পরিবর্তনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বাড়ে কমে ব্যারোমিটারের পারদের মত। বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্র আজব এক কারখানা চালু করেছে। কাঁচামাল ছাড়াই এ কারখানা থেকে যখন তখন উৎপাদিত হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকার। সরকারী এ কারখানায় উৎপাদিত সর্বশেষ ভেজাল পণ্য রাজাকারের তালিকা প্রত্যাখান করেছে দেশবাসী। মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের তালিকার চেয়েও অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ এখন ৩০ লাখ শহীদের তালিকা। এটা সময়ের দাবি। যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন স্বাধীনতার জন্য। জাতীয় জীবনে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে।
আজকে তাদের নাম উঠছে রাজাকারের তালিকায়। রাজাকার বাংলাদেশে একটি গণধিকৃত শব্দ। ‘রাজাকা’ মূলত আরবী শব্দ হলেও এর বহুল প্রচলন উর্দূতে। ‘রাজাকার’ শব্দের অর্থ সাহায্যকারী। তবে একাত্তরে তাদের অনেকে অপকর্মে সাহায্য করেছে পাক বাহিনীকে। হায়দরাবাদের নিজাম সরকারের আদলে একাত্তরে পাক সেনারা প্রায় ৪০ হাজার রাজাকার নিয়ে একটি বাহিনী গড়ে তুলে। বিশেষ করে একাত্তরে বর্ষাকাল শুরু হলে সীমিত হয়ে পড়ে পাক সেনাদের তৎপরতা। তখন তারা সাহায্যকারী হিসেবে বেছে নেয় রাজাকারদেরকে। এক শ্রেনীর রাজাকার ছিলো যারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছিলো। তারা ছিলো অখন্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী। আরেক অংশ ছিলো অপকর্মে লিপ্ত। বাকিরা দরিদ্র শ্রেনীর ৮০ টাকা মাসিক বেতনে কাজ করেছে পেটের দায়ে। পাহারা দিয়েছে গ্রামে গঞ্জে-শহরে-বিভিন্ন স্থাপনা। ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে পাক বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করেছে বাংলাদেশের নিরস্ত্র নিরাপরাধ মানুষকে । তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হয় শুরুতেই। বিজয়ের ২৫দিন পর ’৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে এসে রার্ষ্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দু’সপ্তাহের মধ্যে ২৪ জানুয়ারি জারি করেন ‘দালাল আইন অধ্যাদেশ’। প্রায় ১ লক্ষ ব্যক্তিকে ঐ সময় গ্রেফতার করা হয় দালাল আইনে। অভিযোগ আনয়ন করা হয় ৩৭ হাজার ৪ শত ৭১জনের বিরুদ্ধে। আসল ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী পাক সেনার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না এনে প্রায় ৪০হাজার ব্যক্তিকে দালাল আইনে অভিযুক্ত করায় তখনই এ নিয়ে প্রশ্ন উঠে বিভিন্ন মহল থেকে। প্রখ্যাত রাজনীতিক, লেখক এবং আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র প্রণেতা আবুল মনসুর আহমেদ ৪০ হাজার ব্যক্তিকে গণহারে দালাল আইনে না ফেলে আসল অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদানের পরামর্শ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানকে। দালাল আইন অধ্যাদেশ জারির পর পর দেশব্যাপী সংঘাত, বিদ্বেষ এবং প্রতিহিংসাপরায়ণতা বৃদ্ধি পেলে দালাল আইন অধ্যাদেশে তিনটি সংশোধনী আনা হয়। অবশেষে ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর ১ বছর ১০ মাস ৬দিন পর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট এবং অগ্নি সংযোগকারীদের বাইরে রেখে বাকি সকলের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর শুধুমাত্র অভিযুক্তরাই নয় যাদের সাজা হয়েছিলো তারা ক্ষমার আওতায় পড়ে। ১৯৭৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয় ৩০ হাজার বন্দীকে। দালাল আইন বলবৎ থাকাকালীন ২ হাজার ৮শত ৪৮ জনের মামলার নিষ্পত্তি হয়েছিলো ওই সময়। তন্মধ্যে দন্ডপ্রাপ্ত হন ৭শত ৫২ জন। বেকসুর খালাস পান ২ হাজার ৬ জন। চিকন আলী নামে যশোহরের একমাত্র রাজাকারকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের অভাবে সেসময় গ্রেফতারকৃতদের গুরুদন্ড দিতে পারেননি আদালত। শেখ মুজিব সরকার চার ধরণের অপরাধীকে সাধারণ ক্ষমার বাইরে রাখেন। চালু রাখেন তাদের বিচারের বিধান। দালাল আইন জারির পর থেকে ‘৭৫ এর ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত তালিকাভূক্তদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধেও হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগ অভিযোগ আনা হয়নি। দীর্ঘ এসময় কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত না হওয়ায় রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোঃ সায়েম ১৯৭৫ এর ৩১ ডিসেম্বর দালাল আইন বিলোপ করেন। শেখ মুজিব সরকার দালাল আইনে রাজাকার, আলবদরদের বিচারের পাশাপাশি প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ১৫ জন পাক সেনাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে। পরে যাচাই-বাছাই করে তা ১৯৫ জনে নামিয়ে আনা হয়। বাংলাদেশের মাটিতে তাদের বিচার করা হবে এমন ঘোষণাও দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। কিন্তু তিনি তার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। ১৯৭৪ সালে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের ত্রিপক্ষীয় বোঝাপড়া স্মারকে (মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) স্বাক্ষরের কারণে সরকারীভাবে পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথ চিরতরে রুদ্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডঃ কামাল হোসেন, ভারতের শরণ শিং এবং পাকিস্তানের আজিজ আহমেদ ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল একটি চুক্তি করেন। যার ১৪ এবং ১৫ ধারানুযায়ী ত্রিদেশীয় শান্তি-সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার বিষয়কে প্রদান করা হয় অগ্রাধিকার। ১৪নং ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের পর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন ‘৭১ এর নির্মম ঘটনা ও ভুলভ্রান্তি ভুলে গিয়ে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে বন্ধুত্বের আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রতি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এতে সাড়া দেন।
‘৭১ এর নির্মমতা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়টি বাংলাদেশের উদার জনগণ ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে নূতনভাবে সম্পর্ক গড়তে চায় বলে প্রত্যোত্তুরে জানান বঙ্গবন্ধু। ভারতীয় উপমহাদেশের খ্যাতিমান রাজনীতিক আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু সবসময় যাকে লীডার বলতেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুপস্থিতিতে যিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তার কালজয়ী গ্রন্থ ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’ এর ৬০৭ পাতায় ‘চাঁদে কলংক’ শীর্ষক উপ শিরোনামে লিখেছেন দালাল আইন সম্পর্কে। এখানে তার অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলো। তিনি লিখেছেন- “অকস্মাৎ ২৪ জানুয়ারি আমাদের রাজনৈতিক ‘চাঁদে কলংক’ দেখা দিল। কলংক ত নয়, একেবারে রাহু। সে রাহুতে চাঁদ দ্বিখন্ডিত হইল। রাহু দুইটি। প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার নম্বর ৮ ও ৯। একটার নাম দালাল আইন। আরেকটার নাম সরকারী চাকুরী আইন। উভয়টাই সর্বগ্রাসী ও মারাত্মক। একটা গোটা জাতিকে, অপরটা গোটা প্রশাসনকে দ্বিখন্ডিত করিয়াছে। দুইটাই রাষ্ট্রের বিপুল ক্ষতি করিয়াছে। সে সবের প্রতিকার দুঃসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ। অথচ এ দুইটা পদক্ষেপই ছিল সম্পূর্ণ অনাবশ্যক। সব দমননীতি-মূলক আইনের মতই দালাল আইনেরও ফাঁক ছিল নির্বিচারে অপপ্রয়োগের। হইয়াও ছিল দেদার অপপ্রয়োগ। এই আইন গোটা জাতিকে ‘দেশপ্রেমিক’ ও ‘দেশদ্রোহী’ এই দুই ভাগে বিভক্ত করিয়াছে। অথচ দেশবাসীর চরিত্র তা নয়। ১০ই জানুয়ারি শেখ মুজিব যখন দেশে ফিরেন, তখন তিনি কোনও দলের নেতা ছিলেন না। নেতা ছিলেন তিনি গোটা জাতির। তাঁর নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হইয়া মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের যে স্বাধীনতা আনিয়াছিলেন সেটা কোন দল বা শ্রেনীর স্বাধীনতা ছিল না। সে স্বাধীনতা ছিল দেশবাসীর সকলের ও প্রত্যেকের। এমন কি, যাঁরা স্বাধীনতার বিরোধিতা করিয়াছিলেন তাঁদেরও। সব দেশের স্বাধীনতা লাভের ফল তাই। ভারতের স্বাধীনতা আনিয়াছিলেন কংগ্রেস; অনেকেই তার বিরোধিতা করিয়াছিলেন। পাকিস্তানের স্বাধীনতা আনিয়াছিল মুসলিম লীগ। অনেকেই তার বিরোধিতা করিয়াছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর সবাই সে স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করিতেছেন। স্বাধীনতার বিরোধিতা করার অপরাধে কাউকে শাস্তি ভোগ করিতে হয় নাই। কোনও দেশেই তা হয় না। কারণ স্বাধীনতা আগে ওটা থাকে রাজনৈতিক মতভেদ। শুধু স্বাধীনতা লাভের পরেই হয় ওটা দেশপ্রেম ও দেশদ্রোহিতার প্রশ্ন। সব স্বাধীনতা সংগ্রামের বেলাই এটা সত্য। বাংলাদেশের ব্যাপারে এটা আরও বেশি সত্য। বাংলাদেশের সংগ্রাম শুরু হয় নিয়মতান্ত্রিক পন্থায়, নির্বাচনের মাধ্যমে। সে নির্বাচনে স্বাধীনতা নির্বাচনী ইস্যু ছিল না। আওয়ামী লীগও অন্যান্য পার্টির মতই পাকিস্তান-ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচীর ভিত্তিতে নির্বাচনে লড়িয়াছিল।”
মুক্তিযুদ্ধের সময় একই পরিবারের একভাই মুক্তিযোদ্ধা। আরেক ভাই হয়েছে রাজাকার। বাবা শান্তি কমিটির সদস্য, ছেলে মুক্তিযোদ্ধা। মামা-রাজাকার ভাগ্নে মুক্তিযোদ্ধা। রাজাকার হওয়াটাই নিঃসন্দেহে অন্যায় ছিলো। কিন্তু অনেক রাজাকার নিজ পরিবার, আত্মীয় স্বজন এবং এলাকায় পাকবাহিনীর নির্মমতা বন্ধে কৌশলে কাজ করেছে। এমন বহু উদাহরণ রয়েছে ইতিহাসে। আটচল্লিশ বছর পর বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে সমাজে। এ সময়ে অনেক রাজাকারের সন্তান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। আবার অনেক আওয়ামী লীগ নেতার সন্তান নিজ ঘরানার রাজনীতি ত্যাগ করে আসছে অন্য রাজনীতিতে। আওয়ামী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত বিশিষ্ট কলামিষ্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী আওয়ামী লীগে উচ্চপর্যায়ে অনেক রাজাকার থাকার ইঙ্গিত করেছেন সম্প্রতি।
দেশের মানুষ এখন তালিকা দেখতে চায় ব্যাংক লুটকারী, ঋণ খেলাপী, শেয়ার বাজার ধ্বংসকারী, ক্যাসিনো কেলেংকারীদের মতো দুর্নীতিবাজদের। ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, ৪৭ বছর পর পুণরায় তাদেরকে তালিকাভূক্তির উদ্দেশ্যইবা কি? একাত্তরে যারা রাজাকারদের নিয়ন্ত্রণ করেছে, নিশ্চিত করেছে তাদের বেতনভাতা। সেসব ডিসি, এসপি, মহকুমা হাকিম, ডিএসপিদের তালিকা কেনো করা হবে না। তারা সবাইতো পাকি বাহিনীর হয়ে কাজ করেছে।
নূতন করে ৪৭ বছর পর এই তালিকা সমাজ এবং রাজনীতিতে বিভেদ বিভ্রান্তি ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে।বিনষ্ট করবে জাতীয় ঐক্য। বিতর্কের মুখে তালিকা স্থগিত করা হলেও ইতোমধ্যে নিরাপরাধ যাদের নাম দেশবাসী জেনে গেছে রাজাকার হিসেবে, তাদের সম্মানহানির দায় কে নিবে? রাষ্ট্র কীভাবে তথ্য প্রমাণ ছাড়া একজন মুক্তিযোদ্ধা বা সাধারণ নাগরিককে রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করে। ঘৃণা, বিদ্বেষ, জিজ্ঞাংসা সমাজকে বিভক্ত করে। প্রতিহিংসাপরায়ণ করে তুলে মানুষকে। নূতন প্রজন্মের মনে প্রতিনিয়ত ঘৃণার সঞ্চার ঘটাতে থাকলে ভবিষ্যতে তা বুমেরাং হতে পারে। ঘৃণাবোধ ধারণ করে কোন মানুষ, সমাজ বা রাষ্ট্র মহান ভূমিকা পালন করতে পারেন না। কোন ধর্মেও স্থান নেই ঘৃণার।
-লেখক : সম্পাদক, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ, নিউইয়র্ক|

Print Friendly, PDF & Email