প্রতিশ্রুতিশীল লেখক হোসেন মাহমুদ


মাসউদুল কাদির |♦|

সবুজপাতার প্রতিটি অক্ষরে অক্ষরে আমাদের প্রিয় হোসেন মাহমুদ ভাই ছিলেন সরব, সজীব। তার লেখা ভালো লাগতো। শূন্যদশকে তাকে খুব পড়েছি। তিনি প্রায় সবখানে লিখতেন। তার পারিবারিক সুখ্যাতি ছিল। তিনি কবি ইসমাঈল হোসেন সিরাজীর দৌহিত্র।
শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি চলে গেছেন পরপারে।(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আমরা আর তাকে দেখবো না। একজন লেখকের ইন্তেকালে খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক। তিনি পৃথিবীর আলো বাতাসে পয়ষট্টি বছর বেঁচে ছিলেন। মৃত্যুর আগের সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছিল। অসুস্থ হয়ে গত ৬ অক্টোবর ২০১৯ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন ছিলেন দেশের বর্ষীয়ান এই সাংবাদিক। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, তিনি প্যানক্রিয়াস ইনফেকশন, অস্টিওপোরোসিস ও ক্রনিক অ্যাজমায় আক্রান্ত ছিলেন।
একজন দায়িত্বশীল প্রতিশ্রুতিশীল লেখক ছিলেন হোসেন মাহমুদ ভাই। তিনি তরুণদের ভালোবাসতেন। সময় দিতেন। সুযোগ দিতেন। এক পা এগিয়ে কথা বলতেন। এমন বন্ধুবৎসল লেখক মেলা ভার। বিশেষত তার সময়কার লেখকগণ অবশ্যই একজন হোসেন মাহমুদ সম্পর্কে দারুণ অভিব্যক্তি পেশ করতে পারবেন।
ফোনে আমার অনেকবার কথা হয়েছে। কোনো পরামর্শ চাইলে তিনি দিতেন। সহযোগিতা করতেন। নিজে চব্বিশটির মতো গ্রন্থ উপহার দিয়েছেন। সাংবাদিকতায় ছিলেন ৩৫টি বছর।
আমাদের প্রাণের সংগঠন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও পরে সভাপতি ছিলেন। তার ঘরটাই একটা সংস্কৃতিবান্ধব পরিবেশ ছিল। লেখালেখি বা ছোটদের জন্য চিন্তার খোরাক পাওয়া যেত তার বাসায়। তার কাছে বসলেও একটা ভালোলাগা কাজ করতো। ছোটদের নিয়ে লেখালিখির বিষয়ে ভাবতেন তিনি। আজকাল তো বাচ্চাদের নিয়ে কোনো কাজই হচ্ছে না। দৈনিকগুলোতে সেই আগের লেখালেখির কোনো আলামত নেই। আয়োজন নেই। দিন দিন শিশুদের খাদ্য লোপাট হচ্ছে। গণমাধ্যমে ওঠে আসছে না শিশুবান্ধব লেখা। এগুলো নিয়ে তারও আফসোস ছিল।
লেখক : শিক্ষক ও সাংবাদিক

Print Friendly, PDF & Email