প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হামলায় চিকিৎসক নিহত

রোগীর স্বজনদের হামলায় চিকিৎসকের মৃত্যু

খুলনা প্রতিনিধি

এক প্রসূতি মারা যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুলনায় ডা. মো. আব্দুর রকিব খান নামে এক চিকিৎসক হামলার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

খোজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৪ জুন (রোববার) বেলা ১২টার দিকে গল্লামারী মোহাম্মদ নগর এলাকার শিউলী বেগম (৩০) নামে এক প্রসূতি ডা. রকিবের মালিকানাধীন রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি হন। একইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ডা. রকিব নিজেই তার সিজার করেন। সিজারে একটি সুস্থ বাচ্চা জন্ম দেন ওই প্রসূতি। কিন্তু পরবর্তীতে ওই প্রসূতির রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রক্তক্ষরণ কোনভাবে বন্ধ না হওয়ায় তাকে পরদিন সোমবার খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেয়া হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেকে থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। রাত সোয়া ৮টার দিকে রোগীর স্বজনরা তাকে ঢাকা না নিয়ে পুনরায় রাইসা ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। এসময় ডা. রকিব তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করে।
এরপর রোগীর স্বজনরা ডা. রকিবের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে আহত অবস্থায় প্রথমে গাজি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরদিন (মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায়) শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মারা যান।

রাইসা ক্লিনিকের ম্যানেজার মো. রবিউল ইসলাম খান বলেন, কুদ্দুস নামে রোগীর এক স্বজন তার (ডা. রকিব) ওপর প্রথমে হামলা চালায়। পরে আরও কয়েকজন তাকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তাকে ধাক্কা দেওয়া হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পরে গুরুতর আহত হন। তাকে আমরা উদ্ধার করে প্রথমে গাজি মেডিকেল কলেজে এবং পরে তার অবস্থার অবনতি হলে আবু নাসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান।

আবু নাসের হাসপাতালের পরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র গোস্বামী জানান, মাথায় আঘাতের কারণে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ নিহতের বাড়িতে নেয়া হয়েছে।

খুলনা সদর থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ রাকিবুল ইসলাম জানান, আমরা তার মৃত্যু খবর শুনে ঘটনা স্থলে এসেছি। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছে।
ডিএন/জেএএ

Print Friendly, PDF & Email